মানসিক রোগের কারণ - মানসিক রোগ থেকে মুক্তির উপায়
ভূমিকা
মানসিক রোগ কি
মানসিক রোগের কারণ
  চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে মানসিক রোগ হওয়ার সঠিক কোন কারণ আজ পর্যন্ত বের করা সম্ভব
  হয়নি , তবে বিজ্ঞানীদের গবেষণায় তারা মানসিক রোগ হওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ কে
  উল্লেখ করেছেন।
- কোলাহলময় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ , সামাজিক নিরাপত্তাহীনতার কারণে মানসিক রোগ হতে পারে।
- 
    পারিবারিক এবং সামাজিক অশান্তির কারণে মানসিক রোগ হতে পারে।
 
- 
    বংশগত বা জেনেটিক কারণে এই রোগ হতে পারে।
 
- 
    মস্তিষ্কের রাসায়নিক পরিবর্তন এর কারণে মানসিক রোগ হয়।
 
- 
    জিনগত এবং ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার জটিল পরপার্শ্বিক ক্রিয়ার ফলে মানসিক রোগ হতে
    পারে।
 
- 
    মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বিকাশ ও কর্মক্ষমতার বিপর্যয় ঘটলে মানসিক রোগ হতে
    পারে।
 
- 
    শরীরে জটিল কোন রোগের কারণ থেকে মানসিক রোগ হতে পারে।
 
- 
    অতিরিক্ত মাদক সেবন এর কারণে মানসিক রোগ হতে পারে।
 
- 
    কোথায় গুরুতর আঘাত লাগার কারণে মানসিক রোগ হতে পারে।
 
- 
    হঠাৎ ভয়ংকর বা অস্বাভাবিক কোনো কিছু দেখে ভয় পেলে ও মানসিক রোগ হতে পারে।
 
- 
    দুশ্চিন্তা মানসিক উদ্বেগ ইত্যাদির কারণে মানসিক রোগ হতে পারে।
 
- 
    অতিরিক্ত আনন্দ পাওয়া বা অতিরিক্ত দুঃখ পাওয়া থেকে ও মানসিক রোগ হতে পারে।
 
- 
    অনিয়মিত ঘুমানো বা নিদ্রাহীনতার কারণে মানসিক রোগ হতে পারে।
 
- 
    স্থূলতা বা অতিরিক্ত মোটা হয়ে যাওয়ার কারণ থেকেও মানসিক রোগ হতে পারে।
 
- অনেক সময় অনেক পরিশ্রমের পর সফল না হওয়ার ফলে মানসিক রোগ হতে পারে।
- 
    ডিপ্রেশন বা মানসিক অবসাদ এর কারনে মানসিক রোগ হতে পারে।
 
- 
    অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা বা অতিরিক্ত উন্মাদনা উত্তেজনার কারণেও মানসিক রোগ হতে
    পারে।
 
মানসিক রোগের লক্ষণ
  মানসিক রোগের অনেকগুলো ধরন রয়েছে , এক এক রকম মানসিক রোগীর একেক রকম আচরণ বা
  লক্ষণ রয়েছে ,
আরও পড়ুনঃ শরীর সুস্থ রাখার উপায় কি মানসিকভাবে সুস্থ থাকার উপায়
- অতিরিক্ত উন্মাদনা , প্রলাপ বোকা , চঞ্চলতা , মার মুখী আচরণ করা।
- 
    জিনিসপাতি বা সম্পদের ক্ষতি করা বা ভাঙচুর করা।
 
- ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া না করা ।
- চুপ হয়ে যাওয়া , একা একা কথা বলা ।
- অকারনে সবার সাথে ঝগড়া করা।
- 
    গায়েবি আওয়াজ শুনতে পাওয়া , এবং গায়েবী কথা বলা।
 
- 
    অকারনে নিজে নিজে হাসা , বিষন্ন ভাব , অনিদ্রা ইত্যাদি।
 
- 
    নিজের শরীরের ক্ষতি করার চেষ্টা এবং আত্মহত্যার প্রবণতা ।
 
- 
    প্রত্যেকটি কাজেই নিজেকে দোষারোপ করা।
 
- 
    ছোট্ট কারণকে অনেক বড় করে দেখা এবং সেটি নিয়ে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করা।
 
- সময় মত ঘুম না আসা এবং ঘুমের পরিমাণ কমে যাওয়া।
- 
    যে বিষয়গুলো ভালো লাগতো সেই বিষয়গুলোর প্রতি ভালো না লাগা।
 
- 
    অকারনে সবাইকে সন্দেহ করতে শুরু করা।
 
- শরীর স্বাস্থ্য নষ্ট হয়ে যাওয়া।
- 
    সব সময় শারীরিক দুর্বলতা অনুভব করা।
 
- 
    পেশাগত কাজ বা আমরা যে কাজ করি সেই কাজে অনীহা তৈরি হওয়া।
 
- 
    সব সময় নিজেকে সামাজিক বিষয় বা সব বিষয় থেকে দূরে রাখা।
 
- 
    হঠাৎ হঠাৎ অতিরিক্ত উত্তেজিত হয়ে পড়া।
 
- 
    অনেকদিন ধরে দুশ্চিন্তা বা হতাশায় বা বিষণ্ণতায় ভোগা।
 
- যে কোন সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হওয়া বা সিদ্ধান্ত হীনতায় ভোগা।
- 
    আত্মীয়-স্বজন এমনকি বাবা-মাকেও নিজের শত্রু ভাবা।
 
- নিজের শরীরের যত্ন নেওয়া বা নিজের প্রতি খেয়াল রাখা কমে যাওয়া।
মানসিক রোগ থেকে মুক্তির উপায়
  চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে , প্রাকৃতিকভাবেই পৃথিবীর সকল রোগের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
  মানুষের মধ্যে রয়েছে , সেটা মানুষের শরীর এবং ব্যক্তি বিভেদে হতে পারে , কারোর
  প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি এবং কারো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম , রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
  প্রত্যেকটি মানুষের শরীরেই রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ডিপ্রেশন কেন হয় ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির উপায়
- 
    যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করুনঃ আমাদের জীবন যাপনে কখনো যে কোন
    অপ্রীতিকর ঘটনা বা পরিস্থিতি মোকাবেলা না করে এড়িয়ে যেতে চাই , এই ধরনের
    পরিস্থিতি গুলো না এড়িয়ে সেগুলো মোকাবেলা বা সেগুলোর প্রতিকার বের করার
    চেষ্টা করুন।
 
- 
    পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানঃ প্রত্যেকটা মানুষের শারীরিক এবং মানসিক
    সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতদের জন্য ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, নিয়মিত এবং পর্যাপ্ত
    পরিমাণে ঘুমের অভাবে শরীর এবং মানসিক দুই দিকে ক্ষতিগ্রস্ত হয় , তাই শরীর ও মন
    ভালো রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান তাহলে মানসিক অশান্তি দুশ্চিন্তা এগুলো কেটে
    যাবে।।
 
- 
    দৈনন্দিন কাজে ব্যস্ত থাকুনঃ আপনি প্রতিদিন যে কাজ করেন , ধরুন
    আপনি অফিস করেন , আপনি অফিসে আপনার কাজ নিয়ে সব সময় ব্যস্ত থাকার চেষ্টা
    করুন, এবং অফিসে বাকি সবার সঙ্গে কাজ সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে ব্যস্ত থাকুন।
 
- 
    ব্যায়াম করুনঃ আপনি মানসিক রোগ বা অবসাদ কাটাতে নিয়মিত ব্যায়াম
    করুন , প্রতিদিন রুটিন করে নিয়মিত দুই থেকে আড়াই ঘন্টা ব্যামের পিছে ব্যয়
    করুন এতে আপনার শরীর এবং মন দুইটায় সুস্থ এবং প্রফুল্ল থাকবে।
 
- 
    মানুষকে সঙ্গ দিনঃ একা একা থাকা মানুষকে মানসিক বিপর্যয় বা
    মানুষের রোগের দিকে প্রভাবিত করে , তাই আপনি সকলের সাথে হাসিখুশি আচরণ করুন
    ভাবে দেখবেন আপনার মানসিক তৃপ্তি এবং মন ফুরফুরে থাকছে আপনি বিচলিত হবেন না এবং
    প্রতিকূল অবস্থা কাটিয়ে উঠবেন খুব সহজেই।
 
- 
    বর্তমান নিয়ে ভাবুনঃ আমরা অযথা সবসময়ই অতীত এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশি
    চিন্তা করে থাকি , অতীতের পবনে এবং ভবিষ্যতের হিসাব নিকাশ আমাদেরকে অনেক সময়
    দুশ্চিন্তা এবং হতাশার দিকে নিয়ে যায় , মানসিক রোগের সৃষ্টি হয় , তাই অতীত
    এবং ভবিষ্যতের চিন্তা বাদ দিয়ে বর্তমানে দিকে মনোনিবেশ করুন।
 
- 
    পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুনঃ অনেক সময় শরীরে পুষ্টির অভাবে শারীরিক
    নানান সমস্যার সৃষ্টি হয় , তা থেকে আমাদের শারীরিক এবং মানসিক স্বাভাবিক
    কার্যক্ষমতায় বাধা সৃষ্টি করে , এবং মানসিক রোগের সৃষ্টি হয় , তাই আপনি
    নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার এবং সুষম খাবার গ্রহণ করুন ।
 
- 
    নিয়মমাফিক জীবন যাপন করুনঃ আমরা অনেক সময় নিয়মের বাইরে গিয়ে
    জীবন যাপন করি , যেমন অতিরিক্ত ঘুমানো , কোন কাজ না করা , শরীরের প্রতি যত্ন না
    নেওয়া  , এগুলো আপনার শরীরে এবং মস্তিষ্কে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে , এবং
    তা থেকে মানসিক সমস্যা হতে পারে , তাই আপনি নিয়মিত রুটিন করে সবকিছু করুন এবং
    নিয়মমাফিক জীবন যাপন করুন এতে আপনার শরীর মন দুটোই ভালো।
 
- 
    থাকুন ধূমপান এবং মাদক হতে বিরত থাকুনঃ ধূমপান এবং মাদক সেবনের ফলে
    সেগুলোতে থাকা ক্ষতিকারক উপাদান গুলো আমাদের শরীরে এবং মস্তিষ্কে ব্যাপকভাবে
    ক্ষতিগ্রস্ত করে যা থেকে আমাদের শারীরিক এবং মানসিক নানা রকম সমস্যা সৃষ্টি হয়
    , তাই আপনি ধূমপান এবং মাদক থেকে বিরত থাকুন।
 
- ধর্মীয় কাজে মনোযোগী হনঃ ধর্মীয় কাজে মনোযোগী হোন , তাহলে আপনার অযথা শুনেই গুলো নষ্ট হবে না ধর্মীয় কাজে মনোযোগী হলে , ধরুন আপনি যদি মুসলমান হন তাহলে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করুন এবং কোরআন তেলাওয়াত করুন তাহলে আপনার শারীরিক এবং মানসিক প্রশান্তি বৃদ্ধি পাবে , তা থেকে আপনার শরীর মন দুটোই সুস্থ থাকবে।
লেখকের শেষ কথা
পরিশেষে বলতে চাই উপরের আলোচিত সম্পূর্ণ বিষয়টি , আপনার মানসিক এবং শারীরিক দুই স্বাস্থ্যের জন্যই উপকারী হবে। আশা করছি উপরের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ে আপনি মানসিক রোগ কি , মানসিক রোগের কারণ , মানসিক রোগের লক্ষণ , এবং মানসিক রোগ থেকে মুক্তির উপায় কি এই বিষয়গুলো সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন ,
উপরে আর্টিকেলটি পড়ে আশা করছি আপনি মানসিক রোগ সম্পর্কিত সকল বিষয়ে যথেষ্ট ধারণা পেয়ে গেছেন । ওপরের পোস্ট সম্পর্কিত কোন প্রশ্ন বা নতুন কোন প্রশ্ন করতে চাইলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন , এইরকম তথ্য বহুল পোস্ট পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন ধন্যবাদ।
 
