বাচ্চাদের আয়রন সমৃদ্ধ খাবার কোনগুলো - বাচ্চাদের হিমোগ্লোবিন বাড়ে কোন খাবারে

প্রিয় পাঠক আপনারা অনেকেই হয়তো বাচ্চাদের আয়রন সমৃদ্ধ খাবার কোনগুলো - বাচ্চাদের হিমোগ্লোবিন বাড়ে কোন খাবারে , এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাচ্ছেন । তাহলে সঠিক জায়গায় এসেছেন , আজকের পোস্টটি আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কেননা আজ আমরা আলোচনা করতে চলেছি বাচ্চাদের আয়রন সমৃদ্ধ খাবার কোনগুলো - বাচ্চাদের হিমোগ্লোবিন বাড়ে কোন খাবারে সে সম্পর্কে। তাই আজকের পোস্টটি না টেনে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক বাচ্চাদের আয়রন সমৃদ্ধ খাবার কোনগুলো - বাচ্চাদের হিমোগ্লোবিন বাড়ে কোন খাবারে সে সম্পর্কে।
বাচ্চাদের আয়রন সমৃদ্ধ খাবার কোনগুলো - বাচ্চাদের হিমোগ্লোবিন বাড়ে কোন খাবারে
অনেক সময় নির্ধারিত সময়ের আগে বাচ্চা জন্ম হওয়ার ফলে । বাচ্চার ওজন কম , শরীরে আয়নের ঘাটতি সহ রক্তশূন্যতার মতো সমস্যার সৃষ্টি হয়। তা নিয়ে বাচ্চার বাবা-মা অনেক সময় দুশ্চিন্তার মধ্যে পার করেন। চিন্তা করবেন না আজকের পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার মাধ্যমে আপনি বাচ্চাদের আয়রন সমৃদ্ধ খাবার কোনগুলো - বাচ্চাদের হিমোগ্লোবিন বাড়ে কোন খাবারে এই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন।

বাচ্চাদের আয়রন সমৃদ্ধ খাবার কোনগুলো - বাচ্চাদের হিমোগ্লোবিন বাড়ে কোন খাবারে ভূমিকা

বাচ্চাদের পুষ্টিকর খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে না খাওয়া , এবং শরীরে আইরন ও রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যাওয়ার কারণে , বাচ্চাদেরকে প্রায় রক্তশূন্যতা সহ পুষ্টিজনিত বিভিন্ন সমস্যায় ভুগতে দেখা যায়। তাই আজকে আপনাদের জন্য আমাদের আয়োজন বাচ্চাদের আয়রন সমৃদ্ধ খাবার কোনগুলো - বাচ্চাদের হিমোগ্লোবিন বাড়ে কোন খাবারে , বাচ্চাদের রক্তে হিমোগ্লোবিন কম থাকলে কি হয় , বাচ্চাদের স্বাভাবিক হিমোগ্লোবিন কত থাকে , বাচ্চাদের শরীরে প্রতিদিন কতগ্রাম আয়রন প্রয়োজন হয় এই বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত। 
তাই বাচ্চাদের আয়রন সমৃদ্ধ খাবার কোনগুলো - বাচ্চাদের হিমোগ্লোবিন বাড়ে কোন খাবারে ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে আজকের পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

বাচ্চাদের আয়রন সমৃদ্ধ খাবার কোনগুলো

শরীর সুস্থ এবং ভালো রাখার ক্ষেত্রে আয়রনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আয়রন শরীরের রক্ত তৈরি হওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। আমাদের শরীরের রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করে আয়রন। বাচ্চাদের শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম থাকার কারণে , শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে রক্তকণিকা তৈরি করতে পারেনা এবং বাচ্চার রক্ত চলাচল এ অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়। শিশুদের রক্তস্বল্পতা হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে আয়রনের অভাব।
বাচ্চাদের আয়রন সমৃদ্ধ খাবার কোনগুলো সে সম্পর্কে নিজে আলোচনা করা হলো।
পালং শাকঃ পালং শাক এ প্রচুর পরিমাণে আয়রন এর পাশাপাশি , ক্যালসিয়াম , ভিটামিন ই , ফাইবার , ভিটামিন এ প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। পালংশাক শিশুর শরীরে হজম করে নিতে পারে সহজেই। প্রতিদিন শিশুকে রান্না করা এক কাপ পালং শাক খাওয়ানো হলে শিশু শরীরে প্রায় ৬ মিলিগ্রাম আয়রন প্রবেশ করে।
ডিমের কুসুমঃ বাচ্চাদের শরীরে আয়রন বাড়ানোর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ডিমের কুসুম। ডিমের কুসুমে প্রচুর পরিমাণে আয়রন মজুদ থাকে। একটি ডিমের কুসুমে প্রায় তিন মিলিগ্রাম আয়রন থাকে।
সেদ্ধ আলুঃ একটি খোসাসহ সেদ্ধ আলুতে প্রায় ৩ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে। আলুর পুষ্টিগুণ বজায় রাখতে খোসা সহ আলু সেদ্ধ করে বাচ্চাকে খাওয়ান। প্রচুর পরিমাণ আয়রন ছাড়াও আলুতে ভিটামিন বি , টামিন সি , এবং পটাশিয়াম এর মত উপাদান রয়েছে।
কিসমিসঃ কিসমিস এ প্রচুর পরিমাণে আয়রন মজুদ থাকে। অর্ধেক কাপ কিসমিসে প্রায় ২ মিলিগ্রাম আয়রন মজুদ থাকে। বাচ্চারা কিসমিস খেতেও পছন্দ করে। কিসমিস জাতীয় শুকন ফল খাওয়ার ফলে বাচ্চাদের কষ্ট কাঠিন্য দূর হতে সাহায্য করে।
মিষ্টি কুমড়ার বিচিঃ কুমড়োর বিচিতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে। কুমড়োর বীজ আপনি গুঁড়ো করে বিভিন্ন খাবারে সঙ্গে মিশিয়ে বা রান্না করে বাচ্চাকে খাওয়াতে পারেন। এক কাপ কুমড়োর বিচিতে প্রায় ১২ মিলিগ্রাম আয়রন মজুদ থাকে।
বীজ দানাঃ বীজ দানা জাতীয় খাবার যেমন মটরশুঁটি , মসুরির ডাল , শিমের বিচি ইত্যাদি বীজগুলোতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে। এক কাপ মসুর ডালে মোটামুটি ৬ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে।
মুরগির মাংস এবং লাল মাংসঃ মুরগির মাংস এবং লাল মাংস তে প্রচুর পরিমাণে আয়রন মজুদ থাকে। তবে ফ্যাট জাতীয় অংশভাতে লাল মাংস বাচ্চাদেরকে খাওয়াতে হবে। ছয় আউন্স লাল মাংসে প্রায়ই ৪ থেকে ৬ মিলিগ্রাম আয়রন মজুদ থাকে।

বাচ্চাদের শরীরে প্রতিদিন কতগ্রাম আয়রন প্রয়োজন হয়

বর্তমান সময়ে প্রায়ই দেখা যায় নির্দিষ্ট সময়ের আগে বাচ্চা ভূমিষ্ঠ হয় বা জন্ম নেয়। নির্দিষ্ট সময়ের আগে জন্ম নেওয়া বাচ্চাদের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কম হয়। এবং শিশুর শরীরে আয়রনের ঘাটতি থাকে। বাচ্চা যদি মায়ের বুকের দুধের পাশাপাশি খাবার খেতে শুরু করে , তাহলে অবশ্যই খেয়াল রাখুন সে খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন রয়েছে কিনা। এবং বাচ্চাদের বেশি বেশি আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ান।
বিশেষজ্ঞদের মতে
  • ১ থেকে ৩.৫ বছর বয়সী বাচ্চাদের শরীরে প্রতিদিন ৭ মিলিগ্রাম আয়রন প্রয়োজন হয়।
  • ৩.৫ থেকে ৮ বছর বয়সী বাচ্চাদের শরীরে প্রতিদিন ১০ থেকে ১১ মিলিগ্রাম আয়রন প্রয়োজন হয়।

বাচ্চাদের হিমোগ্লোবিন বাড়ে কোন খাবারে

বিশেষ করে বাড়ন্ত শিশুদের ক্ষেত্রে রক্তশূন্যতয় ভুগতে বেশি দেখা যায় । শিশুদের রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম থাকার কারণে রক্তশূন্যতার মত সমস্যা হয় সৃষ্টি হয়। নিচে বাচ্চাদের রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়াতে যে খাবারগুলো খাওয়াবেন তা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো
ভিটামিন সিঃ ভিটামিন সি এর অভাবে বাচ্চাদের রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যাইতে পারে। তাই বাচ্চাদের রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর জন্য ভিটামিন সি জাতীয় খাবার বেশি বেশি খেতে হবে। যেমন কমলা লেবু , জলপাই , আঙ্গুর , পেয়ারা , স্ট্রবেরি ইত্যাদি ফলগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে।
আপেলঃ রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ানোর জন্য আপেল অত্যন্ত কার্যকরী একটা ফল। এছাড়া আপেলে থাকা প্রচুর পরিমাণে আয়রন , বাচ্চাদের রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।
আনারঃ দেহে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতে এবং রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে আনার বা বেদেনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অনারে ক্যালসিয়াম এবং আয়রনের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং শর্করা মজুদ রয়েছে। শিশুর রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়াতে আনারের জুস নিয়মিত শিশুকে খাওয়াতে পারেন।
বাদামঃ বিভিন্ন ধরনের বাদামে খনিজ পদার্থ এন্টিঅক্সিডেন্ট প্রচুর পরিমাণে মজুদ থাকে। তাই শিশুর রক্তে আয়রনের পরিমাণ বাড়াতে এবং রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে নিয়মিত বাদাম খাওয়াতে পারেন।
কিসমিসঃ কিসমিসের প্রচুর পরিমাণে খনিজ পদার্থ এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যা শিশু শরীরের আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে । এবং রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
খেজুরঃ খেজুরে ভিটামিন , খনিজ পদার্থ , এবং প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে । যা শিশুর শরীরের আয়রনের ঘাটতি পূরণের পাশাপাশি রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বাচ্চাদের স্বাভাবিক হিমোগ্লোবিন কত থাকে

বাচ্চাদের রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম হলে , বাচ্চাদের শরীরে রক্তশূন্যতার মত সমস্যার সৃষ্টি হয়। রক্তশূন্যতার কারণে শিশুদের শরীর দুর্বল হওয়া সহ নানান রকম সমস্যা সৃষ্টি হয়। নিচে আমরা জানবো কত বয়সী শিশুর , স্বাভাবিক হিমোগ্লোবিন কত থাকে।
  • ০ থেকে ৩০ দিন বয়সী বাচ্চাদের হিমোগ্লোবিনের স্বাভাবিক মাত্রা ১৩.৫ থেকে ১৯.৮
  • ৩১ থেকে ৬০ দিন বয়সী বাচ্চাদের হিমোগ্লোবিনের স্বাভাবিক মাত্রা ১০.৭ থেকে ১৭.১
  • ০২ থেকে ৩ মাস বয়সী বাচ্চাদের হিমোগ্লোবিনের স্বাভাবিক মাত্রা ৯ থেকে ১৪.১
  • ০৩ থেকে ৬ মাস বয়সী বাচ্চাদের হিমোগ্লোবিনের স্বাভাবিক মাত্রা ৯.৫ থেকে ১৪.১
  • ০৬ থেকে ১২ মাস বয়সী বাচ্চাদের হিমোগ্লোবিনের স্বাভাবিক মাত্রা ১১.৩ থেকে ১৪.১
  • ০১ থেকে ৫ বছরবয়সী বাচ্চাদের হিমোগ্লোবিনের স্বাভাবিক মাত্রা ১০,৯ থেকে ১৫

বাচ্চাদের রক্তে হিমোগ্লোবিন কম থাকলে কি হয়

বাচ্চাদের রক্তে হিমোগ্লোবিন কম থাকলে রক্তশূন্যতা এবং অ্যানিমিয়ার মত রোগ হয়। বাচ্চার রক্তশূন্যতার কারণ জানতে হলে বাচ্চার বয়স খাদ্য তালিকা লিঙ্গ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে। পরিবারের কারো রক্তশূন্যতা আছে কিনা সেই বিষয়েও জেনে নিতে হবে। বাচ্চার হিমোগ্লোবিনের মাত্রা প্রতি ডেসিলিটারে ৭ থেকে ৮ গ্রাম এর নিচে হলে রক্তশূন্যতার লক্ষণ গুলো দেখা যাবে।
বাচ্চার রক্তশূন্যতা হওয়ার লক্ষণগুলো হলো , শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়া , বাচ্চার ঘুমের পরিমাণ কমে যাওয়া , খাবার প্রতি অনীহা , বাচ্চার ঠোঁট এবং জিভ সাদাটে হয়ে যাওয়া। বাচ্চা অতিরিক্ত রক্তশূন্যতায় ভুগলে শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা হতে পারে এবং মারাত্মক হৃদরোগের মতো সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

বাচ্চাদের আয়রন সমৃদ্ধ খাবার কোনগুলো - বাচ্চাদের হিমোগ্লোবিন বাড়ে কোন খাবারে শেষ কথা

পরিশেষে বলতে গেলে প্রিয় পাঠকগণ আজ আমরা উপরের আর্টিকেলটি তে বাচ্চাদের আয়রন সমৃদ্ধ খাবার কোনগুলো - বাচ্চাদের হিমোগ্লোবিন বাড়ে কোন খাবারে ,বাচ্চাদের শরীরে প্রতিদিন কতগ্রাম আয়রন প্রয়োজন হয় , বাচ্চাদের রক্তে হিমোগ্লোবিন কম থাকলে কি হয় , বাচ্চাদের স্বাভাবিক হিমোগ্লোবিন কত থাকে , ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারলাম। 
আশা করছি আপনি উপরের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আমাদের ওয়েবসাইটটিতে স্বাস্থ্য বিষয়ক , তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক এবং সমসাময়িক সকল আপডেট নিউজ এবং ইনফরমেশন নিয়মিত পাবলিশ করা হয়। এইরকম তথ্যবহুল পোস্ট পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন ধন্যবাদ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url