শ্রী শ্যামা পূজা ২০২৩ - শ্রী শ্যামা পূজার গুরুত্ব ও ইতিহাস

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব হচ্ছে শ্রী শ্রী শ্যামা পূজা বা কালী পূজা। কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে শ্যামা পূজা টি উদযাপন করা হয়। পুরান মতে শ্যামা দেবি দুর্গা রই একটি শক্তি। শাস্ত্রীয় মতে কাল শব্দের অর্থ থেকে কালী নামের উৎপত্তি হয়েছে। 

হিন্দু ধর্মে শ্যামা পূজাকে শক্তির পূজা হিসাবে বিবেচনা করা হয়। জগতের সকল অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে , শুভ শক্তি প্রতিষ্ঠার মধ্যেই হচ্ছে শ্যামা পূজার মাহাত্ম্য। শ্যামা পূজা মূলত হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে কালী পূজা , দেবী মহামায়া , তারা মা , চামুন্ডি , ভদ্রকালী ইত্যাদি নাম গুলোতে পরিচিত।

শ্রী শ্যামা পূজা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। শ্যামা পূজা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধানতম উৎসব গুলোর অন্যতম। বিশেষ করে এই উৎসবটি বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রয়। শ্রী শ্যামা পূজা উৎসবটি প্রতিবছর শ্রাবণ মাসের অষ্টম তারিখে শ্রীকৃষ্ণ ভগবানের জন্মদিন তিথিতে পালন করা হয়। 

শ্যামা পূজা মূলত হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উৎসব। মূলত শ্যামা পূজায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রতি ভক্তদের ভালোবাসা এবং ভক্তি প্রকাশ করা হয়। এই দিন ভক্তরা মানসিক এবং আধ্যাত্মিক জীবনে শান্তির জন্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রতি বিশেষ ভালোবাসা এবং আনন্দ প্রেমের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে। পূজার দিন ভক্তরা বিভিন্ন রকম কীর্তন এবং নামাংস কীর্তন করে থাকেন। ভক্তরাপুর যাওয়ার পর কীর্তনে অংশ নেই এবং শ্রীকৃষ্ণ ভগবানের লীলা কথা এবং নাম কীর্তন করতে থাকেন রাত ভর।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব হচ্ছে শ্রী শ্যামা পূজা বা কালী পূজা। প্রতিবছর কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে শ্রী শ্যামা পূজাটি অনুষ্ঠিত হয়। হিন্দু পুরান মতে ১৮ শতকে নবদ্বীপের রাজা কৃষ্ণচন্দ্র শ্যামা পূজা প্রথম শুরু করেন। এরপর ১৯ শতক থেকে এটি ব্যাপকভাবে প্রচলিত হওয়া শুরু করে। 

শ্রী শ্যামা পূজা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। শ্রী শ্যামা পূজা অর্থাৎ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি শ্রাবণ মাসের অষ্টম তারিখে পালন করা হয়। শ্রী শ্যামা পূজা এবং শ্রী কৃষ্ণ জয়ন্তী হিন্দু ধর্মাবলম্বী্রা ভারত , বাংলাদেশ , নেপাল এবং অন্যান্য হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন প্রতি বছর মহা ধুমধাম এর সাথে পূজাটি উদযাপন করে থাকেন। 

শ্যামা পূজা কার্তিক মাসের অমাবস্যার তিথিতে পালন করা হয়। শ্যামা পূজা উৎসবে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মের বিশেষ আনন্দ এবং ভক্তির মাধ্যমে পালন করা হয়। শ্যামা পূজার পরে ভক্তরা বিভিন্ন রকম কীর্তন , এবং নাম সংকীর্তন এবং শ্রীকৃষ্ণ ভগবানের প্রতি তাদের ভালোবাসা প্রকাশ করেন। শ্যামা পূজার দিনে বিশেষ ভক্তি এবং আনন্দের ভাব প্রকাশ করে , ভক্তরা তাদের আধ্যাত্মিক এবং মানসিক জীবনের শান্তি এবং আনন্দ অনুভব করে।

শ্রী শ্যামা পূজা দুর্গা পূজার মতো নিজগৃহে অথবা মন্ডপে প্রতিমা নির্মাণ করে পূজা উদযাপন করা হয়। অনেক মন্দিরে বা গৃহে প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন ধাতু দিয়ে তৈরি প্রতিমাতেও শ্যামা পূজা উদযাপন করা হয়। শ্যামা পূজার দিন মধ্যরাতে তান্ত্রিক পদ্ধতিতে মন্ত্র উচ্চারণ এর মাধ্যমে শ্যামাপূজা পালন করা হয়। গৃহে সাধারণত অত্যান্তিক ব্রাহ্মণমতে কালি রূপে শ্যামা পূজা অনুষ্ঠিত হয়। 

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস মতে শ্যামা পূজা বা কালী পূজা শ্মশানের অধিষ্ঠাত্রি দেবী। এ কারণে শ্মশানে শ্যামা পূজা মহা ধুমধামসহ উদযাপন করা হয়।শ্যামা পূজার দিন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা সন্ধ্যায় তাদের নিজগৃহে এবং শ্মশানে প্রদীপ জ্বালানোর মাধ্যমে , পরলোক গমন করা পিতা-মাতা ও আত্মীয় স্বজনদের বিশেষভাবে স্মরণ করা হয়। এটিকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা দীপাবলি ব বলে।

মূলত দুর্গাপূজা শেষ হওয়ার পরেই , শ্যামা পূজার প্রস্তুতি শুরু করেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের অমাবস্যা তিথিতে শ্রী শ্যামা পূজা অনুষ্ঠিত হয়। হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন তিথিতে শ্রী শ্যামা দেবীর বিভিন্ন রূপের পূজা করা হয়। দেবীর আরাধনা মন্দিরে তো বটেই এছাড়াও গৃহে ও শ্যামা পূজা অনুষ্ঠিত হয়। 

এবছর শ্যামা পূজার শুভ দিনক্ষণ ইংরেজি মাসের ১২ ই নভেম্বর এবং বাংলা মাসের[২৫ এ কার্তিক] রবিবার অনুষ্ঠিত হবে। শ্যামা পূজার অমাবস্যা তিথি ২৫এ কার্তিক ১২ নভেম্বর ঘ ২-৪-৫১ থেকে ১৩ ই নভেম্বর ঘ ২-২৮-৩০ দুই মিনিট পর্যন্ত অমাবস্যা তিথি থাকবে।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব অন্যতম হচ্ছে শ্রী শ্যামা পূজা। কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে শ্যামাপূজা উদযাপন করা হয়। দুষ্টের দমন এবং সৃষ্টির লালনের মাধ্যমে ভক্তের জীবনে প্রতিশ্রুতি নিয়ে পৃথিবীতে আগমন করেন দেবী শ্রী শ্যামা। হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে শ্রী শ্যামা দেবী শান্তি এবং সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার প্রতক। 

হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা শ্রী শ্রী শ্যামা পূজা বা কালীপূজাকে শক্তির প্রতিকি পূজা হিসাবে পালন করে থাকে। জগতের সকল অশুভ শক্তি কে পরাজিত করার মাধ্যমে শুভ শক্তিকে প্রতিষ্ঠা করতে শ্যামা পূজা বা কালী পূজা করা হয়। শ্যামাপ্রজা তিন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা নিজ গৃহ এবং শ্মশানে প্রদীপ প্রচলন এর মাধ্যমে স্বর্গীয় আত্মীয়-স্বজন পিতা মাতা প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।

পরিশেষে আমরা উপরের আর্টিকেলটি উপরে বিস্তারিত জানতে পারলাম শ্রী শ্যামা পূজা ২০২৩ - শ্রী শ্যামা পূজার গুরুত্ব ও ইতিহাস ,শ্রী শ্যামা পূজা কি , শুভ শক্তির আবাহনে শ্রী শ্যামা পূজা ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পর্কে। আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার মাধ্যমে , আপনি শ্রী শ্যামা পূজা ২০২৩ - শ্রী শ্যামা পূজার গুরুত্ব ও ইতিহাস সহ আরো বেশ কিছু বিষয় সম্পর্কে ইতিমধ্যে বিস্তারিত জেনে গেছেন। 

শ্যামা পূজা সম্পর্কিত আরো কিছু জানার থাকলে আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না। আমাদের ওয়েবসাইট টিতে তথ্যপ্রযুক্তি , স্বাস্থ্য সহ সমসাময়িক সকল ধরনের নিউজ এবং ইনফরমেশন নিয়মিত পাবলিশ করা হয়। এরকম তথ্যবহুল পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।