হার্টের রিং এর মূল্য তালিকা ২০২৩ - হার্টের রিং কোনটা ভালো

প্রিয় পাঠক আপনি কি হার্টের রিং এর মূল্য তালিকা ২০২৩ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাচ্ছেন। অথচ কোথাও সঠিক তথ্য পাচ্ছেন না। চিন্তা করবেন না আজ আমরা আলোচনা করব হার্টের রিং এর মূল্য তালিকা সহ হার্ট সম্পর্কিত বেশ কিছু বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত। তাই হার্ট সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য জানতে আজকের পর্বটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।
হার্টের রিং এর মূল্য তালিকা ২০২৩
হার্ট হচ্ছে আমাদের শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। বর্তমানে আমাদের আশেপাশে প্রায়শই দেখা যায় হার্টের ব্লক হয়ে যাওয়া , বা হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা। তাই আজকে আপনাদের জন্য আমাদের আয়োজন। আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার মাধ্যমে আপনি হার্ট সম্পর্কিত সকল তথ্য খুব সহজেই জানতে পারবেন। চলুন তাহলে দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক।

হার্টের রিং কি

হার্টের রিং হচ্ছে মূলত একটি ধাতব তার জালির মত বা মেটালিক এক ধরনের পাইপের মতো টিউব। যেটা মানুষের হার্টে ব্লক হয়ে যাওয়া রক্তনালিতে পড়ানো হয়। যেটা পড়ানোর ফলে ব্লক হয়ে যাওয়া রক্তনালীতে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করে। যার ফলে হার্ট অ্যাটাক করা ব্যক্তির বুকের ব্যথা কমে আসে এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়।

হার্টে রিং পরানো হয় কেন

হার্টের রিং পরানো হয় মূলত যাদের হার্টের রক্তনালিতে রক্ত চলাচল অস্বাভাবিক হয়ে যায় , যার জন্য রক্তনালী ব্লক হয়ে যায়। হার্টের সেই রক্তনালিতে রিং পড়ানোর মাধ্যমে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। হার্টের রিং পরানো হয় মূলত। কোন মানুষের হার্টের রক্তনালী গুলো যদি ৭০ শতাংশ ব্লক হয়ে যায়। 
সেই ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগণ হার্টের রিং পরানোর পরামর্শ দেন। আমাদের মধ্যে এমন অনেক জন আছে যাদের দুইটা রক্তনালী তে রিং পড়ানো হয়েছে। এমনকি কারো কারো ৩টা রক্তনালিতে তিনটা রিং পড়ানো হয়েছে।

হার্টের রিং এর মূল্য তালিকা ২০২৩

হার্টের রিং এর মূল্য বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে সম্প্রতি কমেছে। বর্তমানে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের নির্ধারণ করে দেওয়া হার্টের রিং এর মূল্য গুলো সম্পর্কে আজ আপনাদের বিস্তারিত জানাবো। বাংলাদেশে মূলত যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক কোম্পানি এবোট ল্যাবরেটরীজ ও বস্টন সাইন্টিফিক এই কোম্পানি দুটির হার্টের রিং আমদানি করা হয়। বর্তমানে ব্যবহৃত হওয়া হার্টের রিংগুলোর দাম যথাক্রমে
  • স্টেন্ট জায়েন্স প্রাইম এর মূল্য ৪২৫ ডলার।
  • এক্সপেডিশন প্রাইম ৬০০ ডলার।
  • প্রমোস প্রাইমার স্টেন্ট ৪৭০ ডলার।
হার্টের রিং সাধারণত তিন জেনারেশনের হয়ে থাকে।
  • ১। ফার্স্ট জেনারেশনঃ First Generation Stent- হচ্ছে টেক্সাস এবং সাইফাস। এগুলো মূলত দুই হাজার সালের দিকে পাওয়া গেল বর্তমানে আর এগুলো পাওয়া যায় না।
  • 2. সেকেন্ড জেনারেশনঃ Scound Generation Stent- এগুলো হচ্ছে মূলত আমেরিকা সহ বাইরের দেশ থেকে ইমপোর্ট করা হয়।
  • 3. থার্ড জেনারেশনঃ Third Generation Stent- এই জেনারেশনের রিংগুলো মূলত ইউরোপ থেকে আমদানি করা হয়।

এনজিওগ্রাম হার্টের রিং এর মূল্য তালিকা ২০২৩

হার্টের রিং মূলত একটি ধাতব মেটালিক টিউব যেটা ব্লক হয়ে যাওয়া রক্তনালীতে পড়ানোর মাধ্যমে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। এনজিওগ্রাম হচ্ছে এক্সরে এর মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন ধমনী গুলো দেখাকে এনজিও গ্রাম বলা হয়। তার জন্য ধমনীর মধ্যে একটি কনট্রাস্ট মিডিয়া প্রবেশ করানো হয়। যেটির সাহায্যে এনজিও গ্রাম করা হয়।
মূলত হার্ট ব্লক কিংবা হার্ট অ্যাটাকের জন্য হার্টের রিং পরানোর প্রয়োজন হয়। এবং এই রিং পড়ানোর মোট খরচ ১,৫ লক্ষ্য থেকে ৩,৫ বা ৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এবং কোন কোন জায়গার হিসেবে এবং জায়গা ভেদে এর খরচ ২,৫ লক্ষ থেকে ৫লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

এনজিওগ্রাম করতে খরচ কত পড়ে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজেস। হচ্ছে একটি বাংলাদেশের বিশেষায়িত সরকারি হাসপাতাল। যেখানে হার্ট সার্জারি , কার্ডিওলজি , ভাস্কুলার সার্জারি সহ ইত্যাদি বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা খুব স্বল্প খরচে সম্পন্ন করা হয়। উক্ত হাসপাতালে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণের ভিত্তিতে এনজিওগ্রামের খরচ কম বেশি এবং পরিবর্তিত হতে পারে। যেমন এনজিওগ্রাম এর ধরন অনুযায়ী। এছাড়াও সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ের উপর ভিত্তি করে ফিরে নেওয়া হয়ে থাকে। তাই হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে এনজিওগ্রাম এর খরচ পরিবর্তিত হতে থাকে।

এনজিওগ্রাম করতে কত সময় লাগে

এনজিওগ্রাম করতে সময় লাগে প্রসিডিউর অনুযায়ী , বড় আর্টারি ব্যবহার করা হলে ৫০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা সময় লাগে। এবং ছোট আর্টরি ব্যবহার করা হলে সেটি প্রসিডিওর এর ক্ষেত্রে জটিল হয় এবং এটাতে সময় অনেক বেশি লাগে। সবমিলিয়ে মোটামুটি আপনাকে এনজিওগ্রাম কমপ্লিট করতে দুই ঘন্টা থেকে দুই ঘন্টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত এক্স-রে এর রুমে থাকতে হতে পারে।

এনজিওগ্রাম খরচ কত ২০২৩

স্থান এবং হাসপাতাল ভেদে এনজিওগ্রাম খরচ পরিবর্তন হতে পারে। অনেক সময় এনজিওগ্রামের ধরন এবং বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে খরচের পরিমাণ পরিবর্তিত হতে পারে। যেমন সরকারি হাসপাতালগুলোতে এনজিও গ্রাম এর খরচ মোটামুটি ৫ থেকে ১৫-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। 
এছাড়াও সরকারি হাসপাতাল ছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল গুলোতে এনজিওগ্রাম এর বিভিন্ন পরীক্ষা করতে বার্থিক টাকা খরচ হতে পারে। বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে আপনি বিভিন্ন ধরনের ভেদে এনজিওগ্রাম এর খরচ হতে পারে ১৫ হাজার থেকে ৬০ অথবা ৭০ হাজার টাকার পর্যন্ত।

হার্টের রিং কোনটা ভালো

হাটেরিং মূলত দুই ধরনের পাওয়া যায় যেমন।
  • ১। বিএমএস {BMS}, এটাতে শুধু ধাতব পদার্থ থাকে। তবে বর্তমানে এই রিংটি এখন আর পাওয়া যায় না।
  • ২। ডিইএস{DES} , এটাতে ঔষধ মিশ্রিত ধাতুর উপরে মেডিসিন দেয়া থাকে। বর্তমানে পুরো পৃথিবীতে এই রিংটি বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। এই ধরনের রিংগুলোতে মেটালের উপর বিভিন্ন ধরনের ঔষধ মিশ্রিত থাকে যা রক্তনালীর গায়ে লেগে থাকা চর্বিগুলো অপসারণ করতে বেশ কার্যকরী।
মূলত হার্টের জন্য আমাদের বাংলাদেশে বিএমএস এর চেয়ে , ডিইএস অনেক ভালো। বর্তমানে আমাদের বাংলাদেশে বিএমএস এর তুলনায় ডিইএস বেশি ব্যবহৃত হয়।

হার্টের রিং এর মেয়াদ

হার্টেব্লক হলে সাধারণত রিং পড়ানোর মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়। তবে রিং পরানোর পরও হাটে ব্লক হতে পারে। রিং পরানোর পর ও হার্টে সেখানেও ব্লক হতে পারে এছাড়াও নতুন নতুন জায়গায় ব্লক এর সৃষ্টি হতে পারে। কারণ শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমার যে প্রক্রিয়াটা সেটা যদি বন্ধ না হয়। এবং চর্বি জমার প্রক্রিয়াটা যদি শরীরে অব্যাহত থাকে তাহলে ইতি মধ্যেই হার্টের লাগানো রিংটি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাই হার্টের রিং এর সঠিক কোন মেয়াদ থাকে না। তাই হার্টের রিং লাগানোর পর বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ ও অনুযায়ী চলাফেরা করলে হার্টে লাগানো রিং অনেকদিন পর্যন্ত ভালো থাকে।

হার্টের রিং এর ছবি



হার্টের রিং কখন লাগানো ভালো

হার্টের রিং লাগানোর সবচেয়ে সঠিক সময়টি হচ্ছে , হার্ট অ্যাটাকের ২৪ ঘন্টার মধ্যে রিং লাগানো। হার্ট এটাকের পর যত তাড়াতাড়ি হার্ট এ রিং লাগানো যায় , সেটা তত কার্যকারিতা লাভ করে। এবং যদি হার্ট অ্যাটাকের সঙ্গে সঙ্গে , হার্টের ব্লক খোলার কোন ঔষধ সেবন ছাড়াই হার্টের রিং লাগানো হয় , তাহলে এটিই হার্ট অ্যাটাকের সবচেয়ে কার্যকরী চিকিৎসা হিসেবে ধরা হয়। 
আরেকটি পদ্ধতিতে রিং লাগানো ভালো হয় সেটি হচ্ছে যাদের ঘন ঘন বুক ব্যথা হয় এবং একবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে , অথবা যাদের ইটিটি পরীক্ষা পজিটিভ হয়েছে। তাদের এনজিওগ্রাম পরীক্ষায় যদি বাম পাশের রক্তনালী ৫০% এবং বাকি রক্তনালী গুলো ৭০ পার্সেন্ট এর বেশি ব্লক থাকে। তাহলে এই অবস্থায় হার্টের রিং পরিয়ে নেওয়া ভালো।

হার্টে রিং পরানোর পর করনীয়

হাটের রিং পরানোর পর হার্ট সুস্থ রাখার জন্য আপনাকে নিয়মিত কিছু শারীরিক কসরত এবং খাদ্যাভ্যাস এ কিছু পরিবর্তন করতে হবে। নিচে উল্লেখিত নিয়ম গুলো পড়ার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই জানতে পারবেন হার্টের রিং পরানোর পর করণীয় কাজগুলো সম্পর্কে।
  • প্রথমত আপনাকে প্রতিদিন সকালে পর্যাপ্ত পরিমাণে হাঁটাহাঁটি করতে হবে। কারণ নিয়মিত হাঁটার ফলে আপনার হার্টের রক্তনালী গুলোর রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হতে সাহায্য করবে।
  • হার্টের রিং পড়ানোর পর যাদের ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপচরিত সমস্যা আছে , সেগুলো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
  • ফ্যাট জাতীয় এবং চর্বি জাতীয় খাদ্য বাদ দিতে হবে। যেমন গরুর মাংস , খাসির মাংস , ডিম , ঘি , মাখন এবং অতিরিক্ত তেল চর্বি জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে।
  • ধূমপান এবং মদ্যপান বা অ্যালকোহল পান পুরোপুরি ভাবে বাদ দিতে হবে।
  • চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী রক্ত তরল রাখার ঔষধ এবং শরীরের চর্বি কমিয়ে রাখার ঔষধ আজীবন সেবন করতে হবে।
  • এবং নিয়মিত তিন থেকে পাঁচ মাস পর বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এবং নিয়মিত চেকআপ করাতে হবে।
  • নিয়মিত খাদ্যাভ্যাস মেইনটেইন করে চলতে হবে এবং হেলদি খাবার গ্রহণ করতে হবে। চর্বি জাতীয় এবং অতিরিক্ত তৈলাক্ত জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে হার্ট ভালো রাখতে।

হার্টের রিং এর মূল্য তালিকা ২০২৩ শেষ কথা

পরিশেষে বলতে গেলে প্রিয় বন্ধুগণ হার্ট সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করেছি। আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ার মাধ্যমে হার্ট সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য আপনারা বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। হার্ট সম্পর্কিত আরো কোন তথ্য জানার থাকলে আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। আমাদের ওয়েবসাইটটিতে স্বাস্থ্য , তথ্যপ্রযুক্তি সহ সকল ধরনের সমকালীন তথ্য , আপডেট নিউজ এবং ইনফরমেশন নিয়মিত পাবলিশ করা হয়। এরকম তথ্যবহুল পোস্ট পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট টি ভিজিট করুন ধন্যবাদ।
Next Post Previous Post
1 Comments
  • INFORMATION HUB BD
    INFORMATION HUB BD December 1, 2023 at 5:26 PM

    thank you

Add Comment
comment url